তো একদা এক বুড়ো দেখিলো তার প্রতিবেশী এক বৈশ্য দরজা জানালা খুলিয়া মহা আনন্দে ভোজন করিতেছে।
বুড়ো প্রশ্ন করিলো, “ওহে বৈশ্য। কী হয়েছে বলোতো। দরজা খুলিয়া পার্টি চলিতেছে? কাহাকে শো-অফ করিতে চাহিতেছ?”
বৈশ্য বলিলো, “আহা হোম কোয়ারেন্তিনের জন্যে বার্গার ল্যাবে বাঙ্গালী নববর্ষ উদযাপন করতে যেতে পারছিনে বুড়ো। এজন্যেই তো একটূ নিজে নিজে এক টূকরো ইলিশ ছ’জন মিলে খাচ্ছি।”
বুড়ো বলিলো, “এ একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না? পথে যে কত শূদ্র না খেয়ে মরছে।”
বৈশ্য কহিলো, “উফ বুড়ো, আমার মেন্টাল হেলথে চাপ পড়ছে যে। তার ওপর এইসব শূদ্ররা নোংরা! ছি! এদের কপালে এ-ই থাকবে। আমার জাতের সাথে এদের জাত মিলিও না গো। আমি যে বার্থরাইটের কারনেই এদের চাইতে উঁচু জাত। তার ওপর কয়েক লাখ টাকা দিয়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের ওপর ডিগ্রী কিনেছি। আমাকে ঘরে বসে কালচার করতে দাও তো”
বুড়ো বলিলো, “তা মেন্টাল হেলথটা না হয় বুঝলাম। কিন্তু এদিকে যে দেশ ডুবতে বসলো। দেশ নিয়ে এক্টূ ভাব্বী নে বাবা?”
বৈশ্য কহিলো, “না গো, ওসব ক্ষত্রীয়রা দেখবে।”
বুড়ো কহিলো, “কিন্তু ক্ষত্রীয়রাতো পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা শুধু বামুনদের জন্যে রাখিয়াছে। তারা আবার ২ শতাংশ হারে লোন পাইতেছে। শূদ্ররা যে কিছুই পাইতেছে না বাবা…”
বৈশ্য কহিলো, “ঠিকোই আছে! বামুনরা জব ক্রিয়েটর! তাহারা রিস্ক টেকার! তাহারা ও আমি একই! আমিও একদিন বামুন হইবো!”
বুড়ো কহিলো, “কিন্তু বৈশ্য যে কখনই বামুন হতে পারে না বাবা..”
উত্তেজিত হইয়া কহিলো, “তো আমি কি শূদ্রদের সহিত সলিড্যারিটি পোষন করিবো আলবৎ না| আমার আত্মসম্মান আছে বুড়ো!”
“কিন্তু বাবা…”
বৈশ্য কহিলো, “আমি অতসত বুঝি না। আমি আমার ছোট্ট ঘরে বসে থাকতে পারলেই বাঁচি। দেশ যেখানে মন চায় সেখানে যাক।”
বুড়ো দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বৈশ্যকে আনফ্রেন্ড করিয়া সেথা হইতে চলিয়া আসিলো।
(কাল্পনিক গল্প| কারো সাথে মিলে গেলে স্বাধীন দায়ী নয়|)
